মাথা ভারী লাগার কারণ - মাথা ব্যথা কেন হয়

আমাদের জীবন চলাচলের মধ্য দিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি, তবে আমরা সকলেই কমবেশি মাথাব্যথা সমস্যা এবং মাথা ভারী হওয়া সমস্যাই ভোগে থাকি। এই মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা অনেক রকম ওষুধ সেবন করেও এ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না এছাড়াও আমরা এই মাথাব্যথা নিয়ে অনেকভাবেই চিন্তিত থাকি।

মাথা ভারী লাগার কারণ - মাথা ব্যথা কেন হয়

বন্ধুরা আমরা এখানে মাথা ব্যথা ও মাথা ভারী হওয়া নিয়ে আলোচনা করব এবং তা থেকে মুক্তি পাব কিভাবে সেই বিষয়গুলি জানবো এবং তা জানার জন্য আমাদের পোস্টটি পড়তে থাকুন।

মাথা ব্যথা কেন হয়

সাধারণত আমাদের মাথা ব্যাথা হওয়ার কারণ দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত পরিশ্রম করা, খুব বেশি রোদের মধ্যে থাকলে, খুব বেশি টেনশন করলে মাথা ব্যথা হয়। এছাড়াও আমাদের শরীরে যতটুকু ঘুমের প্রয়োজন ততটুকু ঘুম না হলে সেটা আমাদের মাথা ব্যথা হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। সারাদিন আমরা যদি খুব বেশি চিল্লাচিল্লি করি সেটার জন্য মাথাব্যথা হয়ে থাকে , এছাড়াও আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ব্যথায় এবং জ্বর,সর্দি, কাশি, এসব কিছু হওয়ার আগে মাথা ব্যথা হয়ে থাকে।
আমাদের সারাদিন চলার সময় যদি কোন বিরক্তিকর কাজ একঘেয়েমি কাজ এবং বেশি হইচই এর মধ্যে থাকলে সেটা মাথাব্যথা কারণ হয়ে পড়ে আমরা যখন কোন কাজ করি সেই কাজটি বেশি অতিরিক্ত হয়ে গেলে সেটাও মাথা ব্যথা কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এছাড়াও শারীরিক মানসিক অবস্থার কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে তাছাড়া মাথায় আরো কারনে ব্যথা হয় সেগুলো টিউমার জনিত, মস্তিষ্কে পানি জমা, দাঁত ব্যথা থেকে, চোখ দিয়ে পানি পড়া থেকে এবং মাথায় আঘাত লাগা, থেকে ও মাথা ব্যথা হয়ে থাকে।

মাথা ভারী হয় কেন

মাথা ভার লাগার কারণ হিসেবে প্রথমেই মনে আসে ঘুম, আমাদের যদি ঠিকঠাক মতো ঘুম না হয় সে কারণে মাথা ভার হয়ে থাকে এছাড়াও আমরা যদি অতিরিক্ত পানিতে ভিজি সেক্ষেত্রে আমাদের মাথা ভার হয়ে থাকে, এছাড়াও মাথা ভার হওয়ার সবচেয়ে প্রধান কারণ হলো দুশ্চিন্তা ,অতিরিক্ত টেনশন, ও মাইগ্রেনের কারণে মাথা ভার হয়ে থাকে। অতিরিক্ত ধূমপান, মদ্যপান, এবং মাদকাসক্ত হলে মাথা ভার হয়ে থাকে।

এছাড়াও বেশিক্ষণ না খেয়ে থাকা, শরীর দুর্বল হয়ে থাকলে মাথা ভার হয়, তাছাড়া সেক্সুয়াল কারণেও মাথা ভার হয়ে থাকে, ঘন স্বপ্নদোষ, মাস্টারবেশন, মেহ রোগ, চোখ উঠা, এসব কিছু জন্যেও মাথা ভারী হয়ে থাকে।

মাথা ভারী হলে করণীয়

মাথা ভারী হয়ে থাকার থেকে যদি আমরা মুক্তি পেতে চাই সেক্ষেত্রে আমরা প্যারাসিটামল, নাপা, পেপটিক আলসাররধী ঔষধ খেতে পারি,তবে সেগুলো যদি আমরা খুব বেশি খায় এবং প্রতিদিন খেয়ে থাকি তাহলে মাথা ভার হয়ে থাকা বেশি হয়ে যেতে পারে, কে আবার মেডিসিন ওভার নিউজ হেডেক বলে থাকে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে আমরা বেশি প্রয়োজন না হলে মাথা ভারী হওয়া কোন ঔষধ না খাওয়ায় ভালো।

আপনার যদি খুব বেশি মাথা ভারী হয়ে থাকে এবং এটা যদি দুই থেকে তিন দিনের বেশি হয় তাহলে আমরা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করব। এছাড়া মাথা ভারী হলে কিছু প্রাথমিক ও ঘরোয়া পদ্ধতিতে তা সমাধান করা যায়,চিনি ছাড়া আদা দিয়ে চা, এর সাথে আরো কিছু যোগ করতে পারেন পুদিনা পাতা, ও লবঙ্গ।

তুলসী পাতার রস ও মধু গরম করে খেতে হবে এসব কিছু দিয়ে ঘরোয়া ভাবে মাথা ভার সমস্যাটি সমাধান করা যায় তবে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, আমি তো গোসল, প্রয়োজন মত ঘুম, মদ্যপান,ধূমপান এরকম ধরনের বিভিন্ন নেশা জাতীয় জিনিস থেকে বিরত থাকতে হবে।

মাথা ব্যথা কোন রোগের লক্ষণ

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কমবেশি সকলেরই মাথাব্যথা রয়েছে তবে সামান্য মাথাব্যথা থেকে দেখা দিতে পারে অনেক রকম রোগের চলুন আমরা তা জেনে আসি
  • মাথার ভেতর রক্তপাত হলে মাথার পিছন দিক থেকে ঘাড় পর্যন্ত প্রচন্ড ব্যথা হয়।
  • চোখের কোন জটিল সমস্যা বা পাওয়ার বাড়লে চোখের চারিপাশে সহ মাথা ব্যথা করে।
  • ব্রেন টিউমার হলে মাথার ডান পাশে ব্যথা হয় বা টেম্পোরাল লোবে সেই অংশে ব্যথা হয় তবে ছোট হলে হয় না।
  • বয়স্কদের মনের পিছনে টেম্পোরাল আটারি থাকে আর্টরাইটিস নামে একটি অসুখ থাকে যার কারণে প্রচন্ড মাথাব্যথা হয়।
  •  কানে যদি কোন রকম ঘা হয়ে থাকে সেই ব্যথা থেকে মাথার ব্যথা হয়ে থাকে।

মাথার উপরে ব্যথার কারণ

মাথার উপরের দিকে ব্যথা হওয়ার কারণ জীবনশৈলীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়া, পর্যাপ্ত পরিমাণের অ্যালকোহল পান করা, বেশি চাপে থাকা, চাপ অনুভব করা, মাথার উপরের দিকের ব্যথার প্রভাত হয়ে থাকে এছাড়াও মানুষের জৈবিক চাহিদার জন্য এ ব্যথা হয়ে থাকে এছাড়াও সাইনাস, কোনকশন, ব্রেন টিউমার, ট্রপ স্ট্রোক থেকে হতে পারে।

মাথার পিছনে ব্যথা হওয়ার কারণ

সাধারণত মাথার পিছনে ব্যথা দেখা দেয় অতিরিক্ত পেশার থাকার কারণে হয়ে থাকে। এটি টেনশন হেডেক ও ক্লাস্টার এর লক্ষণের সাথে মিল পাওয়া যায়, ঘাড়ে আঘাত পেলে মাথার পিছনে ব্যথা হয়ে থাকে, এটি মাথার এক পাশ থেকে শুরু হয়ে আস্তে আস্তে মাথার পিছনের দিকে আসে এবং কান পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া হেমোরেজ নামক রোগ হলে মস্তিষ্কের পর্দায় রক্তক্ষরণ হয় এবং তা থেকে মাথার পিছনে ব্যথা করে।

তাছাড়া বসে থাকার ভঙ্গি বা চলাফেরা এলোমেলোভাবে করলে মাথা এবং ঘাড়ের পিছনে ব্যথার জন্য দায়ী। তবে আপনার শরীর যদি দুর্বল থাকে সে ক্ষেত্রে কাঁধে এবং ঘাড়ে উত্তেজনা তৈরি করে মাথার পিছনে ব্যথা অনুভব হয়। আপনার মাথার খুলির পিছনে নিঃশেষ ও কাঁপুনি মধ্যে থেকে এ ব্যথা শুরু হয়।

গ্যাস থেকে মাথা ব্যথা

বাঙালি সব কিছু সঙ্গে জুড়ে দেন গ্যাস, এরা পেটে গ্যাসের সমস্যায় জর্জরিত মাথা ব্যথা ও সেই তালিকা থেকে বাদ যায় না। সত্যিই কি গ্যাস থেকে মাথা ব্যথার সমস্যা হয়? চলুন আমরা এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ে উত্তরটি জেনে আসি - এই ব্যাপারে কি বলল ডাক্তার জয়দীপ ঘোষ , আমাদের গ্যাস নিয়ে বেশি সচেতনতা যার জন্য আমরা সব রোগের সাথে জড়িয়ে ফেলি গ্যাস। তবে মনে রাখবেন মাথায় গ্যাস গোছানো সম্ভব নয়, ভাই গ্যাস থেকে মাথা ব্যথা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

বেশিরভাগ মানুষ যা জানেন তা ভুল তাই আমাদের ভুল সুধরে যেতে হবে এবং নিয়মিত মাথা ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তা থেকে রোগ মুক্তি পাবে, ডাক্তার জয়দেব ঘোষ বলেন সকল বিষয়কে ভাবলে ক্ষতি হবে, অনেক সময় দেখা যায় যে রোগীর অন্য কোন অসুখ হয়েছে কিন্তু সেই গ্যাস ভেবে বসে রয়েছে এ থেকে ক্ষতির সম্ভাবনা বা আশঙ্কা বেশি যেমন ধরুন,

মস্তিষ্কে ছোটখাটো স্ট্রোক হয়েছে কিন্তু সেটাকে গ্যাস ভেবে চিকিৎসা না হয়ে বসে থাকলে তা পরবর্তীতে বড় ধরনের স্ট্রোকের আকার ধারণ করবে সেদিকে আমরা সব সময় সচেতন থাকবো এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেব সকল বিষয়ে।

মাথা ব্যথা হলে করণীয়

আমাদের অনেকেরই মাথাব্যথা হলে আমরা বিভিন্ন ভাবে বিরক্তিক র ও অসহ্যকর মনে হয় কিছু ভালো লাগে না এবং মনের ভিতর অশান্তি ভাব হয় আমরা এই মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঘরোয়া ভাবে কিছু টিপস নিয়ে আপনাদের কাছে এলাম চলুন আমরা অসহ্যকর মাথাব্যথা থাকা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় জেনে আসি -

সামান্য আবহাওয়া পরিবর্তন হোক বা কাজের চাপে হোক অল্পতেই মাথা ব্যথা শুরু হয় ব্যস্ততার মাঝে ঘুমানোর কোন সময় পাওয়া যায় না অকারনে যদি মাথা ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণের বিশ্রাম ও ঘুমের প্রয়োজন। মাথা ব্যাথা হলে ব্যাথা নাশক ওষুধ খাওয়া মোটেও ঠিক না তাই আমরা যা করব
  • কপালে দুই পাশের রং রোগ দুই আঙুলের ডগা দিয়ে ধরে মেসেজ করব এবং ঘাড়ের কাছে কিছু সময় দুই আঙ্গুলের ডগা দিয়ে মেসেজ করলে সেটা খুব স্বস্তি আনে এবং কিছু টা ক্লান্তি দূর করে।
  •  অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করলে ঘরের আলো কমিয়ে দিন, কম্পিউটারের স্কিন, মোবাইলের স্ক্রিন কি সব ধরনের আলো থেকে দূরে থাকুন।
  • এসেনসিয়াল ওয়েল তেল আঙুলের ডগায় নিয়ে কপালের দুই পাশের রগ থেকে শুরু করে সারা কপাল মেসেজ করুন।
  • চায়ে আদা লবঙ্গ মধু এসব জাতীয় জিনিস খেলে মাথার যন্ত্রণা থেকে আরাম পাওয়া যায় এছাড়া চা এবং কফিতে উপস্থিত ক্যাফেইন থাকায় মাথার যন্ত্রণা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
  • অসহ্যকর মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে আপনি গোসল করতে পারেন এছাড়া কিছু সময় ঠান্ডা পানি ঢাললে ভালো লাগবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
#
#
#