কি কি কারণে মাথার চুল পড়ে যায়
ভূমিকা
চুল পড়ার সমস্যাই আমরা কমবেশি সবাই ভোগী। অনিয়ন্ত্রিত মাসিক চাপ, চুলে ভুল প্রসাধনী ব্যবহার ,অতিরিক্ত তাপমাত্রায় চুল স্ট্রেট করা ইত্যাদির কারণে ও চুল পড়ে যায়। অতিরিক্ত তাপমাত্রায় চুল স্ট্রেট করলে চুলে কেরাটিনের সমস্যা হয়। এছাড়া ভিটামিনের অভাবে অকালে চুল পড়ে যায়। ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন ডি ৩,ই, বায়োটিন অর্থাৎ ভিটামিন বি ৭ এর অভাবে এ সকল সমস্যা দেখা দেয়।
কোন ভিটামিনের কারণে চুল পড়ে যায়
মূলত ভিটামিন ডি এর কারণে চুল পড়ে যায়। ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস সূর্য রশ্মি, তাছাড়া বিশেষ কিছু খাবারেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক নিয়মে প্রতিদিন ৯০-১০০টি চুল পড়া স্বাভাবিক বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। কড লিভার অয়েল, মাছ ,ডিমের কুসুম ,মাশরুম, দুধ ইত্যাদি ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার এইসব খাবার খেলে চুলের ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়ে যায়। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় সবুজ শাকসবজি থাকা প্রয়োজন।এছাড়া ভিটামিন এ এর কারণে চুল রুক্ষ শুষ্ক হয়ে যায় ও পড়ে যায়। অনেক সময় ভিটামিন ই এর কারণেও চুল পড়ে যায় এজন্যই ভিটামিন ই যুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
আরো পরুন প্রোজেস্টেরন গর্ভাবস্থায় কি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
চুলে ব্যবহারের জন্য ভিটামিন ই যুক্ত ক্যাপসুল পাওয়া যায় এটি ব্যবহারে চুল প্রাণবন্তর হয়ে ওঠে। এছাড়া ভিটামিন সি এর অভাবেও চুল ঝরে যায় তাই প্রতিদিন খাবারের সাথে লেবু থাকা প্রয়োজন। তাছাড়া জিংক ও চুলের জন্য খুব প্রয়োজন একটু উপাদান, সুন্দর চুলের জন্য প্রচুর জিংক দরকার। চুলের গ্রন্থে ক্ষয়ে যাওয়া ও নতুনভাবে চুলের স্বাস্থ্য গড়ে তোলায় জিং ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কুমড়ার বীজ ,হিজলি বাদাম, মুরগির মাংস, দই ,ছোলা, স্পিনার ইত্যাদি জিংক সমৃদ্ধ খাবার।
অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান
ঘরোয়া উপায়ে আমরা চুল পড়ার সমাধান করতে পারি। পেঁয়াজ, আদা রস ব্যবহারে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায় এবং চুল সিল্কি ও স্বাস্থ্য ভালো হয়ে ওঠে। আমরা ঘরোয়া তিনটি উপায়ে চুল পড়া বন্ধ করতে পারি। চলুন সে উপায় গুলো জেনে নেই।
- শরীরে পানির মাত্রা কমে আসলে চুল পড়া শুরু হয় এবং চুল পাতলা হয়ে আসে। শরীরে পানির মাত্রা কম থাকায় নতুন চুল গজাতে পারে না ফলে ঘনত্ব হয় না। যদি চুল ঘন রাখতে চান ,তাহলে পরিমাণ মতো করে পানি পান করুন।
- চুল পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে টোলোজেন এফ্লুভিয়াম,এর ফলে মাথা থেকে চুল আপনা আপনি ঝরে যায়। এবং ত্রিকোটেলোমেনিয়া, যার ফলে চুল প্রচুর টানার ইচ্ছা জাগে এবং চুল ঝরে যায় এগুলা অতিরিক্ত মানসিক চিন্তার কারণে হয়ে থাকে। মানসিক চিন্তাভাবনা থেকে দূরে থাকতে আমাদের ব্যায়াম করা প্রয়োজন।
- চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন একটি ঘরোয়া উপায় হচ্ছে গ্রিন টি। দুইটি গ্রিন টি ব্যাগ এক কাপ পানিতে ভালো হয় মিশিয়ে নিয়ে এবং তা ঠান্ডা হয়ে গেলে মাথায় লাগিয়ে নিন। গ্রিন টি চুলের আগা থেকে গোরা পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে দিন এবং কয়েক ঘন্টার পর তা ধুয়ে ফেলুন। গ্রিন টি এক সপ্তাহ ব্যবহার করলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
এছাড়াও আলুর রস ,মেহেদী ,ডিমের কুসুম, মধু অ্যালোভেরা ,নিম পাতার রস, পেয়ারা কুশি চুল পড়া বন্ধ করতে অনেক ভূমিকা রাখে।
ছেলেদের চুল পড়ার ওষুধ
ছেলেদের চুলের ওষুধের মধ্যে অন্যতম মিনোক্সিডিল,এটি ছেলেদের চুলের বৃদ্ধি ও টাকের চিকিৎসা করে। এই ওষুধটি ভেসোলিডেটর হিসাবে পরিচিত ওষুধ বিভাগে আসে। এই ওষুধটি বাহ্যিকভাবে প্রয়োগ করা হয়। পুরুষেরা যেহেতু বেশিরভাগ সময় ঘরের বাইরে থাকেন সেজন্য তারা চুলের যত্ন নিতে পারেন না। তাই খুব অল্প সময়ে চুল পড়া নিয়ে ভোগেন আমরা ঘরোয়া কয়েকটি উপায়ের মাধ্যমে চুল পড়া বন্ধ করতে পারি, মাত্র ২ দুই সপ্তাহের মধ্যে।চলুন সেগুলো জেনে আসি।
- চুল পড়া বন্ধ করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করুন ।এটি ব্যবহারে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং সুস্বাস্থ্যকর ও চুলের রং বজায় থাকবে।
- চুল পড়া বন্ধ করতে চুল সব সময় পরিষ্কার রাখুন চুলের গোড়ায় জমে থাকা ময়লার কারণে খুশকি হয় যার ফলে চুল পড়তে শুরু করে।
- অ্যালোভেরা ও নিম পাতার রস যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন, এতে মাথা ঠান্ডা থাকবে এবং চুল পড়া কমে যাবে।
- চুল পড়া বন্ধ করতে প্রতিদিন বাইসাইকেল চালান এবং সাঁতার করুন এর পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত ৪০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন এতে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে এবং মানসিক চিন্তার ম মাত্রা কমে যাবে এবং চুল পড়াও বন্ধ হয়ে যাবে।
এই নিয়ম গুলো দুই সপ্তাহ মেনে চলুন এবং আপনার চুল পড়া বন্ধ করুন ।
চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার
আমেরিকান একাডেমি ডার্মাটোলজিস্টদের মতে প্রাকৃতিক নিয়মে প্রতিদিন ৯০ - ১০০ চুল পড়া স্বাভাবিক। অনেকেই নিয়মিতভাবে চুল আঁচড়ানোর কথা ভুলে যান। অনিয়মিতভাবে চুল আঁচড়ানো জন্য চুল পড়ে যায়। অতিরিক্ত মানসিক চিন্তাভাবনা কারণ ও চুল ঝরে যায়।আবার ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন বি ৭,ভিটামিন ডি৩,ই ইত্যাদির কারণেও চুল পড়ে যায়।চুল ঘন,সুন্দর,সিল্ক,চুলের রং বজায় রাখতে চুলে নিয়মিত শ্যাম্পু করুন ও সিরাম ব্যবহার করুন।
এছাড়া আমলকি, শিকাকাই, রিঠা, ত্রিফলা ,জবা ,এলোভেরা, ব্রাক্ষী ,ভিঙ্গরাজ ,বেল ,চন্দন ,আরনিকা, নিম ইত্যাদি ব্যবহার করুন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে চুলের সৌন্দর্য বাড়ে তুলুন। এ ছাড়া গ্রিন টি ব্যবহার করে চুলের রং বজায় রাখুন। ভিটামিন বি১২ ও ভিটামিন ডি এর অভাবে চুল পড়ে যায়। এই দুই ভিটামিন নিয়মিত ব্যবহারের ফলে চুলের বৃদ্ধি ও মাথা ত্বক সুস্থ থাকে। গোস্ত ও গরুর দুধে ভিটামিন বি ১২ পাওয়া যায়। এছাড়াও চুলে ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শেষ কথা
বন্ধুরা এই পোস্টটি ছিল অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের জন্য যদি এ পোষ্টটি পড়ে আপনাদেরকে ভালো লেগে থাকে এবং উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এ পোস্টটি আরো অনেককে পড়ার সুযোগ করে দিন পোস্টটিতে শেয়ার দিন এবং এরকম ধরনের আরো পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং নতুন কিছু পাওয়ার জন্য ফাস্ট ব্লগার আইটি এই ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করতে থাকুন ধন্যবাদ ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নিজের শরীরের প্রতি যত্ন রাখুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url