ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা -ঝিনুক চাষ পদ্ধতি

হ্যালো বন্ধুরা, আমরা সবাই ঝিনুক শব্দটির সাথে পরিচিত। আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা ঝিনুক খাওয়া যায়। ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। আজকের পোস্টটি ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা -ঝিনুক চাষ ওপর। ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা -ঝিনুক চাষ পদ্ধতি আজ আমরা জেনে যাব।
ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা -ঝিনুক চাষ পদ্ধতি
যেহেতু আমরা এখানে ঝিনুক নিয়ে কিছু জানার জন্য এসেছি সেহেতু আমরা এই পোস্টে ঝিনুক সম্পর্কে যত সব আলোচনা করা হয়েছে এবং এই সমস্ত আলোচনা আপনারা মন দিয়ে জানার জন্য এই সমস্ত ধারণাগুলো আপনি নেওয়ার জন্য এই পোস্টটি পুরোপুরি করতে হবে এই পোস্টটি পুরোপুরি না করলে আপনি কিছু বুঝতে পারবেন না তো চলুন বন্ধুরা আমরা এই পোস্টটি পড়ে আসি 

ভূমিকা

অনেকেই ঝিনুক খনন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। ঝিনুক সমুদ্র বা লবণাক্ত পানিতে বসবাস করে থাকে। ঝিনুকে কপাট,মুখ,পাকস্থলী, ফুলকা, হৃদযন্ত্র, মালদ্বার সবকিছু বিদ্যমান রয়েছে। ঝিনুকের কোন চোখ ও মাথা নেই।ঝিনুকে রয়েছে প্রোটিন,চর্বি, কার্বোহাইড্রেট।ঝিনুকে একটি সুবিধা ঝিনুকের কোন কিছুতে উচ্চ ক্যালারি নেই। ঝিনুকে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ লবণ,আয়রন, ফসফরাস ও কোবাল্ট।ঝিনুকে থাকা জিংক শুক্রাণু সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং লিবিডো যৌন ইচ্ছা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।বিশেষজ্ঞরা শাকসবজির সাথে ঝিনুক খাওয়া পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ঝিনুকে থাকা কার্বোহাইড্রেট মানুষের জন্য খুব উপকারী। মানুষের শরীর সুস্থ রাখতে ঝিনুক অনেক ভূমিকা রাখে। গর্ভবতীদের জন্য সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার রান্না করে খাওয়া যেতে পারে। ঝিনুক অনেক ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস বহন করে। চলুন আজকে আমরা জেনে আসি ,ঝিনুক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা-ঝিনুকচাষ ।

ঝিনুক খাওয়ার উপকারিতা কি

আমরা অনেকেই ঝিনুকের উপকারিতা কি এই বিষয়টা জানি না। আমরা অনেকেই শুধু জানি ঝিনুক থেকে শুধু মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের অনেকেরই অজানা হয়েছে যে ঝিনুক রান্না করে খাওয়া যায়। ভিটামিন রয়েছে। ঝিনুক খাওয়ার উপকারিতা কি এবং খাওয়ার জন্য আমাদের মানব দেহের কি উপকার হয় তা আজ আমরা জেনে যাব এই পোষ্টের মাধ্যমে। ঝিনুক খাওয়ার পরে মানবদেহে চারটি উপকার হয়ে থাকে। যেমন:
  • প্রোটিন: ঝিনুকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। নিয়মিত এক কাপ যেন খাওয়ার ফলে মানুষের দেহের প্রোটিনের অভাব পূরণ হয়ে যায়।
  • ভিটামিনA: ঝিনুকে রয়েছে ভিটামিন A। ভিটামিন Aতে বিদ্যামান রয়েছে ২৪০ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট। যা মানুষের শরীরের ৮ থেকে ১০ শতাংশ চাহিদা মিটায়।
  • হার শক্ত করে: ঝিনুককে বলা হয় হার শক্ত করার যন্ত্র।অস্টিওআরর্থাইটিসের সমস্যা দূর করতে ঝিনুকের ভূমিকা রয়েছে।নিয়মিত ঝিনুক খাওয়ার ফলে দাঁত ও হাড়ের সঙ্গে থাকা টিস্যুগুলো শক্ত হয়। সবুজ ঝিনুকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। যা খাওয়ার ফলে বাতের ব্যথা ও শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে: সবুজ ঝিনুক দেহের পেশি, টিস্যু, কোষকে সুস্থ রেখে স্নায়ুর বিকাশ করে। যারা অ্যাস্থামা রোগে ভুগছেন তাদের জন্য ঝিনুক একটি উপকারী উপাদান।
ঝিনুকে আরো রয়েছে চর্বি২.২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট৩.৭ গ্রাম এবং শক্তিমান ৮৬ কিলোক্যালরি।ক হচ্ছি ঝিনুক খাওয়ার উপকারিতা কি -ঝিনুকচাষ এই কথাটি শুনে তো বন্ধুরা অবাক হওয়ার কোন বিষয় নেই।আজ আমরা ঝিনুকের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানব। আমরা অনেকেই শুধু জানি ঝিনুক থেকে মুক্তা সংগ্রহ করা যায় কিন্তু, ঝিনুক মানুষের শরীরের উপকার করে থাকে তা অজানা। উপকারিতা ও অপকারিতা -ঝিনুক চাষ পোস্ট করবেন বলে আমি আশা করি।

ঝিনুক খাওয়ার অপকারিতা কি

আপনার কি জানেন ঝিনুক খাওয়ার অপকারিতা কি। ঝিনুকের সঙ্গে পরিচয় থাকলেও ঝিনুক খাওয়ার বিষয় টা আমাদের অনেকের কাছেই নতুন হবে হয়তো। ঝিনুকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে যা কিডনি তে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আজ আমরা এ পোষ্টের মাধ্যমে ঝিনুক খাওয়ার অপকারিতা কি জানবো। আরো জানবো ঝিনুক খেলে আমাদের কি কি ক্ষতি হয়।ঝিনুকের বাসস্থানের কাজ জলকে ফিল্টার করা ও দূষিত পানি কে বিশুদ্ধ করা।
ঝিনুক দূষিত পানিতে থাকে পানি বিশুদ্ধ করার জন্য। সমুদ্রে বা যেখানে ঝিনুক চাষ করা হয় সেখানে গিয়ে দেখবেন, সেই পানি থেকে যদি ঝিনুক তোলা হয় তাহলে ঝিনুকে অনেক ক্ষতিকর পদার্থ ও অনুজীব বিদ্যমান থাকে।ঝিনুক প্রোটোজোয়া করে স্যাক্সিটক্সিন এর মাধ্যমে বিষ জমা করে যা মানব দেহের জন্য বিপদজনক মারাত্মক।ঝিনুকে এন্টারোভাইরাস রয়েছে যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। যারা গর্ভবতী রয়েছেন বা যারা বাচ্চাদের দুধ খাওয়ান তারা ঝিনুক খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

যারা কাঁচা ঝিনুক খেতেৎপছন্দ করেন, তারা আমাদের এই পোস্টটি পড়ে সতর্ক হয়ে যান ‌‌।ঝিনুকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিংক যা মানব দেহের ক্ষতি করতে পারে। জিংক মানব দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো হয় না। জিংক মানবদেহের আয়রন ও তামার মাত্রা হ্রাস করে। যাদের সামুদ্রিক মাছ বা সামুদ্রিক কোনো কিছুতে এলার্জি রয়েছে তারা ঝিনুক খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

ঝিনুকের গঠন

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমরা ঝিনুকের সঙ্গে পরিচিত থাকলেও ঝিনুকের গঠন সম্পর্কে আমি খুব কমই জানি। আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে জেনে যাব ঝিনুকের গঠন কিভাবে হয় ঝিনুকে কি কি রয়েছে।ফুলকা, হৃদযন্ত্র, মলদ্বার,কপাট,মুখ ঝিনুকে বিদ্যমান রয়েছে। আরো রয়েছে আবরণ অংশ, ওষ্ঠ অংশ, পাকস্থলী, মলনালী নিয়ে ঝিনুকের শরীরে গঠিত। ঝিনুকের উপরের খোলসটি শক্ত মজবুত এই শক্ত ও মজবুত খোলস দিয়ে ঝিনুক তার পুরো শরীর ঢেকে রাখে।ঝিনুক ফুলকার সাহায্যে পানিতে শ্বাস প্রশ্বাস চালায়। 

ঝিনুক ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও খাদ্য গ্রহণে জন্য সক্রিয় হয়ে থাকে। জল ছাকুনির জন্য প্রতি ঘন্টায় পাঁচ লিটার করে খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। ঝিনুকের আবরণের অংশ পাতলা ঝিল্লি রয়েছে।এই পাতলা ঝিল্লি রক্তনালীর সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। ঝিনুকের তিনটি স্তরে হৃদপিণ্ড রয়েছে। ঝিনুকে রয়েছে দুটি কিডনি যা বৃক্কের সাহায্য নিয়ে বর্জ্য পদার্থের শরীর থেকে বের করে। ওষ্ঠা ও মাংসপেশির মাধ্যমে ঝিনুকের খোলস বন্ধ হয় ও খোলস খুলতে সক্ষম হয়।

ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষ করার উপায়

মুক্তা যা প্রাকৃতিক এর কি সুন্দর উপাদান ঝিনুক থেকে মুক্তা চাষ করার উপায়। যা অলংকার হিসেবে পৃথিবীতে ব্যবহার হয়ে আসছে। মুক্তা রত্নপাথরের মধ্যে একটি উপাদান। মুক্তা ঝিনুকের দেহ থেকে জৈবিক ভাবে তৈরি হয়। মুক্তা শুধু অলংকার হিসেবে ব্যবহার হয় না বিভিন্ন রোগের ঔষধ ও প্রধাসনী হিসেবে ব্যবহার হয়, আর এই কারণেই দিনের পরে দিন মুক্তার চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। যার কারণে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি মুক্তা এখন চাষ করার মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে। যা বৈজ্ঞানিকভাবে চাষ করা হচ্ছে আধুনিক যন্ত্রের দ্বারা। চীন, জাপান সফলতার সঙ্গে মুক্তা চাষ করে আসছে। আমাদের দেশে মাটি ও পানির জৈবিক গুনাগুনে মুক্তা চাষ করা যায়।

বাংলাদেশের মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকদের তথ্যমতে, বর্তমানে আমাদের দেশের ৪১ টি জেলার ৯০ টি উপজেলার ১৫০ জন চাষিরা মুক্তা চাষের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এই মুক্তা তারা অলংকার তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে, আবার কেউ কেউ অনলাইনের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে মুক্তা বিক্রয় করছে। একটি পুকুরে বাঁশের খুটিতে জালের ভিতরে বিশেষভাবে ঝুলিয়ে রাখা ঝিনুক। এই ঝিনুকের মধ্যেই ধীরে ধীরে তৈরি হয় মুক্তা। একটা ঝিনুক থেকে সাত থেকে আট মাস পর পর মুক্তা সংগ্রহ করা যায়। মুক্তা চাষের ক্ষেত্রে ঝিনুক নির্বাচন করা একটি ক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।ঝিনুক মুলত তিন প্রজাতির হয়ে থাকে
  • ল্যামেলিডেন্স মার্জিনালিস(Lamellidens marginalis)
  • পররেসিয়া কররুগাটা(Parreysia corrugata)
  • কোররিয়ানাস(Corrianus)
প্রত্যেকটির চাষের সময় ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে কোনটার এক বছর লাগে আবার তিন বছর আগে। মুক্তা চাষের জন্য সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ ও পুকুর নির্বাচন করতে হবে। ঝিনুক নদী খাল বিল থেকে সংগ্রহ করা যায় অথবা ক্রয় করে সংগ্রহ করা যায়। যখন ঝিনুকের ৭ থেকে ৮ সেন্টিমিটারের মতো সাইজ হয়ে আছে তখন সেটা অপারেশন করার জন্য যোগ্য হয়ে ওঠে। ঝিনুকের ভেতরে যতক্ষণ সময় ম্যান্টর আবৃত কোষ ভালো থাকে ততক্ষণ সেই ঝিনুক চাষ করা যায়।

একটি ঝিনুক থেকে দুই মিমি করে মেন্টাল কেটে নিয়ে অন্য ঝিনুকে প্রবেশ করা হচ্ছে অপারেশন। ৬ থেকে ৮টি মুক্তা একসঙ্গে একটি জালের সঙ্গে বেঁধে পানির দেড় ফুট নিচে ঝুলে রাখতে হয়। একটি ঝিনুক থেকে অন্য ঝিনুকের দূরত্ব ৫ মিটার। পানির ডিগ্রি সবসময় ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে থাকতে হয়। মাঝে মাঝে ঝিনুক চেক করতে হয়। এক একটি মুক্তা ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে তার ওপরে বিক্রিয় করা হয়।

ঝিনুকের প্রজনন

ঝিনুক মুক্তা দুইটি সঙ্গে পরিচয় থাকলেও ঝিনুকের প্রজনন বিষয়টা আমাদের অনেকের কাছে অজানা। কিভাবে ঝিনুকের প্রজনন হয় তা আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানবো। ঝিনুকের মধ্যে মুক্তা প্রথমে অনুজীব হিসেবে প্রবেশ করে। সেটা হতে পারে বালুকোণা অথবা ভাসমান কোনো খাদ্য কোণা। ঝিনুকের খলসের মধ্য দিয়ে এই বালু অথবা খাদ্য কণা প্রবেশ করে থাকে, প্রবেশ করার পর ঝিনুকের মধ্যে নরম স্তরে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
এরপর ঝিনুকের মধ্যে ঢুকে যাওয়া অন্য একটা বস্তুর যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে ঝিনুক তার দুটি খোলস বন্ধ করে নেয়। তারপর সেই কণাগুলোর উপর বিচিত্র মনে কণা স্তর পড়ে। এরপর ধীরে ধীরে একটি স্তরের উপর একটি স্তর পড়তে থাকে। আর এইভাবে ধীরে ধীরে একটু সময় তৈরি হয়ে যায় মুক্তা।

শেষ কথা

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম ঝিনুকের উপকারিতা ও অপকারিতা।কিভাবে মুক্তা চাষ করা যায় ও মুক্তা প্রজনন হয়।আমি আশা করি আমার এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের অনেক উপকার হয়ে থাকবে। এইরকম পোস্ট পেতে আমাদের ফাস্ট ব্লগার আইটি ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং শেয়ারের মাধ্যমে অন্যকে দেখার সুযোগ করে দিন।আমাদের সাথে থাকবেন, ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এবং সমাজ সুন্দর করে তুলবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
#
#
#